
মোহাম্মদ কামাল হোসেন: একজন সংগ্রামী মানবিক নেতা
পরিচিতি: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত ঢাকা-৫ আসনের (ডেমরা- যাত্রাবাড়ী-কদমতলীর একাংশ) সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, সংগঠক ও রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সহকারী সেক্রেটারি। তিনি যাত্রাবাড়ী-ডেমরা-কদমতলী উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, যুব উন্নয়ন সংসদ ঢাকার সভাপতি এবং মতিঝিল আইডিয়াল ক্লাবসহ অসংখ্য সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
পরিবার ও শিক্ষাজীবন: ১৯৭৬ সালে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া মোহাম্মদ কামাল হোসেনের পিতা মরহুম মাওলানা আবুল খায়ের ছিলেন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, শিক্ষক, ইমাম ও সমাজ সেবক এবং মাতা ১১ সন্তানের রত্নগর্ভা গৃহিণী। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন থেকেই তিনি মেধার স্বাক্ষর রাখেন যার ধারাবাহিকতায় তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স এবং বিআইইউ থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবনেই তিনি শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি বিবাহিত এবং ৩ সন্তানের জনক।
সাংগঠনিক ও কর্মজীবন: মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরে যোগদানের মাধ্যমে। ছাত্রশিবিরে তিনি খিলগাঁও থানা সভাপতি, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবন শেষে তিনি বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে রাজনীতি ও মানবকল্যানে আরো বেশি যুক্ত হওয়ার জন্য তিনি চাকরি ছেড়ে সমাজসেবা ও ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানের পর মতিঝিল থানা আমীর (২০১২-২০১৮) হিসেবে এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সহকারী সেক্রেটারি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।
সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবন: মোহাম্মদ কামাল হোসেন ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকার রাজপথে সক্রিয় থেকে বহুবার পুলিশি হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে রাজপথে বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে ২০১১-২০২৪ সাল পর্যন্ত ৯ বার গ্রেপ্তার,গুম, রিমান্ড ও অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং অর্ধশতাধিক মামলায় তাকে মোট ৮৫৩ দিন কারাবরণ করতে হয়েছে। একইসঙ্গে তার পরিবার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বারবার হামলা, মামলা ও লুটপাটের শিকার হয়েছে।
সমাজকল্যাণে অবদান (ঢাকা-৫): এত যুলুম নির্যাতনের পরেও তিনি সবসময় ঢাকা-৫ আসনের মানুষের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ রয়েছেন। দরিদ্রদের কর্মসংস্থান, আর্থিক সহায়তা, খাবার বিতরণ, শীতবস্ত্র বিতরণ, করোনাকালীন মানবিক সেবা, মাদক ও ইভটিজিং দূরীকরণ, বৃক্ষরোপণ, খাল পরিষ্কার, খেলাধুলার আয়োজন এবং রাস্তা সংস্কার ও বর্ধিতকরণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। একইসঙ্গে তিনি অসংখ্য সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
জুলাই বিপ্লবে ভূমিকা: ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবে (ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান) মোহাম্মদ কামাল হোসেন ঢাকার রাজনৈতিক সংগঠকদের মধ্যে একজন হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি আন্দোলনকে সুসংহত রূপ দিতে রাজপথে সরাসরি অংশগ্রহন করেন এবং একাধিকবার আহত হন। জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে তিনি দলের তরুণ ও অভিজ্ঞ নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেন। ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে তার সাংগঠনিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতাকে কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে তিনি বিভিন্ন স্তরের ছাত্র ও যুবকদের সংগঠিত করেন এবং তীব্র আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী, রায়ের বাগ, সাইনবোর্ডসহ ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছাত্রজনতার মিছিল ও সমাবেশে সরাসরি তত্ত্বাবধান ও নেতৃত্ব দেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের ভয়াবহ দমন-পীড়ন সত্ত্বেও তিনি আন্দোলনকারীদের সাহস জোগান এবং রাজপথে থেকে তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করেন। জুলাই বিপ্লবে তার ভূমিকা কেবল একজন সংগঠক হিসেবেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তিনি আন্দোলনকারীদের সাহস সঞ্চারকারী এক প্রতীক ছিলেন। তার ত্যাগ ও নেতৃত্ব এই ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের অবিস্মরণীয় অংশ। বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে তিনি নিয়মিতভাবে জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ, মতবিনিময় ও আর্থিক সহায়তার সাথে জড়িত যা বিপ্লব এবং নতুন বাংলাদেশের প্রতি তার কমিটমেন্টকে তুলে ধরে।
অঙ্গীকার:
মোহাম্মদ কামাল হোসেন তার দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, জুলাই বিপ্লবে তার সাহসী ভূমিকা এবং ধারাবাহিক জনসেবামূলক কাজের মাধ্যমে ঢাকা-৫ আসনের মানুষের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন। চাঁদপুরের সন্তান হলেও, দীর্ঘদিন ধরে ডেমরা এলাকায় নিজস্ব বাড়ি থাকার সুবাদে নাগরিক হিসেবে তিনি এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখের সাথে মিশে গেছেন।
মোহাম্মদ কামাল হোসেন ন্যায়ের প্রতীক দাঁড়িপাল্লার পক্ষে আপনাদের দোয়া ও মূল্যবান ভোট নিয়ে ঢাকা-৫ আসনাধীন ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, কদমতলীর একাংশকে একটি উন্নত, কল্যাণময়, সমৃদ্ধ, মানবিক ও নিরাপদ এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে সেবক হিসেবে কাজ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।